রোজ রবিবার, ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, সকাল ৯:০০


					
				
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ হবে অনুকরণীয় জনবান্ধব পুলিশ – বিএমপি কমিশনার

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ হবে অনুকরণীয় জনবান্ধব পুলিশ – বিএমপি কমিশনার

ধানসিঁড়ি নিউজ।। আজ ২৬ অক্টোবর ২০২০ খ্রিঃ অফিসার্স মেস চাঁদমারী বরিশালে , বিএমপি’র ১৪ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়।

এসময়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পুলিশ কমিশনার বিএমপি মোঃ শাহাবুদ্দিন খান বিপিএম-বার মহোদয় দিনের শুরুতে পতাকা উত্তলন করে , ফেস্টুন ,পায়রা উড়িয়ে ,কেক কেটে, ফুলেল শুভেচ্ছা ও শুভকামনা বিনিময় করে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন।

পরবর্তীতে সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের মধ্যে খাবার বিতরণ করা হয়।

মোঃ শাহাবুদ্দিন খান বিপিএম (বার)প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে উপস্থিত ইলেক্ট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়ার মাধ্যমে সম্মানিত নগরবাসীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন ,বৈশ্বিক মহামারী কভিড-১৯ পরিস্থিতির মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বল্প পরিসরে আমরা ১৫ বছরে পর্দাপন করতে যাচ্ছি। এই প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর প্রধান মোটো হবে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ সত্যিকারের জনবান্ধব, নারীবান্ধব পুলিশ।
আমরা অত্যন্ত কৃতজ্ঞ চিত্তে প্রথমেই স্মরণ করতে চাই বরিশালবাসীকে, বরিশালের আপামর জনসাধারণ ও সমস্ত নেতৃবর্গদের প্রতি ,যাদের অবদান ,ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এবং আকাঙ্খায় এখন থেকে ১৪ বছর আগে এই শহর বাসীকে আরো নিরাপদ করার জন্য ,পুলিশের সেবা আরো নিবিড় ভাবে তাদের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য, তাদের সকল ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক, পারিবারিক, শিক্ষা সহ সকল কাজে যেন নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায় সেই প্রত্যাশায় বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ গড়ে উঠেছিল।

আমরা আজকের এই দিনে বিশেষ কৃতজ্ঞতা চিত্তে স্মরণ করি এই ১৪ বছরে যে সমস্ত পুলিশ কমিশনার বৃন্দ এখানে তাদের শ্রম ও মেধা দিয়ে এই বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশকে একটি কার্যকর পুলিশ প্রতিষ্ঠানে পরিনত করেছেন, সাথে যে সমস্ত কর্মকর্তারা ছিলেন যাদের শ্রম,মেধা ও ঘামে আমরা আজ এতদূর পর্যন্ত আসতে পেরেছি এবং সকল পুলিশ সদস্য যারা কর্মরত ছিলেন তাদের প্রত্যেকের অবদানকে আমরা কৃতজ্ঞ চিত্তে স্মরণ করি।

বিশেষ করে এখানে সরকারি কাজ করতে যেয়ে যাঁরা আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন, আমরা সেই সকল শহীদ পুলিশ সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা জানাই এবং তাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।

প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী একটু আনন্দময় পরিবেশে পালন করে আমরা নিজেরা উজ্জীবিত হওয়ার পাশাপাশি শহরবাসীকেও আমরা শুভেচ্ছা বিনিময় করে আমাদের কমিটমেন্ট ও দায়িত্ব কর্তব্য গুলোকে রিভিউ করতে চেয়েছিলাম,কিন্তু বর্তমানে বৈশ্বিক কভিড-১৯ পরিস্থিতির মধ্যে যে সকল বিধি নিষেধ আছে সেগুলো মেনে আমরা এই স্বল্প পরিসরে পালন করছি এবং এ সময় বিশেষ করে সাংবাদিক বৃন্দ, ফটো সাংবাদিক বৃন্দ, প্রিন্ট ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধি বৃন্দ যারা এই শুভক্ষণে আমাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছেন তাদের কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, হাঁটি হাঁটি পা পা করে আমরা আজ ১৪ বছর শেষ করেছি, সময়টা খুব বেশি নয় আবার একেবারে কম ও নয়। আমরা শৈশব পেড়িয়ে কৈশোরে পর্দাপন করেছি।

কৈশোরের মধ্যে যে তেজ উদ্দীপ্ত,কর্মস্পৃহা থাকে আমাদের মধ্যে তা আছে। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের সেবার মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে জনসম্পৃক্ততামূলক কর্মসূচী সারা বাংলাদেশের ন্যায় আমরা ও হাতে নিয়েছি।

স্কুল, মাদ্রাসা সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আমাদের ছাত্র ছাত্রী, শিক্ষক, অভিভাবক মিলে একটি কমিউনিটি আছে, সেখানে যেনো শান্তি শৃঙ্খলা ও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় থাকে এবং আমাদের ছাত্রছাত্রী আইন মান্য করে এবং মূল্যবোধ সম্পন্ন নাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠে তার জন্য আমাদের বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে কিছু কর্মসূচী নিয়েছি এবং তা চলমান আছে।
আমাদের সর্বশেষ কমিউনিটি পুলিশিং এর পরিপূরক অংশ হিসেবে আমাদের আইজিপি ড. বেনজির আহমেদ বিপিএম-বার মহোদয়ের সূদুর প্রসারি নেতৃত্বের মাধ্যমে সারাদেশে আমরা বিট পুলিশিং কার্যক্রমকে শক্তিশালী করেছি , তারই ধারাবাহিকতায় এখানেও আমরা সিটি কর্পোরেশন এর ওয়ার্ডে ২ টি করে এবং ইউনিয়নে ৩ টি করে সর্বোমোট ৯৭ টি বিটের কার্যক্রম চালু করেছি।
ইতোমধ্যে আমরা বিট কার্যক্রম পরিচালনার অফিস উদ্বোধন করেছি। সার্বিক ভাবে আমাদের এরিয়া কে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে একজন সাব ইন্সপেক্টর এবং তার সাথে কিছু সহযোগী সদস্য নিয়ে বাড়ি বাড়ি আমাদের পুলিশের সেবা পৌছে দেয়ার লক্ষ্যে আমরা “বিট পুলিশিং বাড়ি বাড়ি, নিরাপদ সমাজ গড়ি”শ্লোগান নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।

পুলিশের জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা নিশ্চিত কল্পে, অনিয়ম, ব্যত্যয় এবং জবাব দিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্য আমরা সরাসরি জনগণের সাথে ওপেন হাউজ ডে সভা করি ।
২০০৬ সালে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ এর যাত্রা শুরু হয়।

মোঃ শাহাবুদ্দিন খান বিপিএম-বার,গত ১২ এপ্রিল ২০১৯ খ্রিঃ বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের পুলিশ কমিশনার হিসেবে যোগদান করেন ।
যোগদানের শুরু থেকে এ পর্যন্ত চার থানা বেষ্টিত এই নগরী ও নগরীর জনগণকে তিনি তাঁর নেতৃত্বে শতভাগ সেবা নিশ্চিত করতে ব্যতিক্রমী কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।

পদক্ষেপগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, সমাজ থেকে অপরাধ ও মাদক নির্মূলে কমিউনিটি পুলিশিং, বাল্যবিয়ে, ইভটিজিং, মাদকের ভয়াবহতাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে মহানগরীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের নিয়ে স্টুডেন্ট কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের কমিটি গঠন এবং প্রতি মাসে আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক মতবিনিময় সভা, ইভটিজিং প্রতিরোধে নগরীর প্রতিটি স্কুলের সামনে নজরদারী জোরদার , “নাগরিক তথ্য নিবন্ধন করি, সন্ত্রাস -জঙ্গিবাদ মুক্ত সমাজ গড়ি ” এই স্লোগানকে সামনে রেখে মহানগরীর সকল নাগরিকের তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষন (সিআইএমএস), ভুক্তভোগী ও সেবাপ্রত্যাশীর সরাসরি বক্তব্য শুনে জবাবদিহীতা নিশ্চিত করে সেবাদানের লক্ষ্যে প্রতি মাসে প্রত্যেক থানায় ওপেন হাউজ ডে ,বিট পুলিশিং ,নির্ভেজাল ও নিষ্ঠার সাথে কর্তব্য পালনে অনুপ্রেরণা যোগাতে পুলিশ সদস্যদের নিয়ে উদ্দীপনামূলক কর্মসূচি ,পুলিশ সদস্যদের মধ্যে মাদকাসক্ত চিন্হিত করার জন্য ডোপ টেস্ট, সেবার মান আরও বৃদ্ধির লক্ষ্যে “নিরাপদ বরিশাল” ফেসবুক গ্রুপ, বিএমপি’র নিজস্ব ওয়েবসাইট খোলা সহ আরও অন্যান্য কর্মপদ্ধতির মাধ্যমে ইতোমধ্যে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশকে তিনি একটি জনবান্ধব পুলিশ হিসেবে চেনা -অচেনা সর্বমহলে আত্মপ্রকাশ করেছেন ।

এরই ধারাবাহিকতায় বিএমপি’র পিওএম,পুলিশ লাইন ও থানাগুলোতে একই সাথে কেক কেটে ও বড় খানার আয়োজনের মাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন করা হয়।

সকলের আন্তরিক সদিচ্ছা এবং অংশগ্রহণে পুলিশ জনতা এক হয়ে এই নগরীকে একটি পরিচ্ছন্ন নিরাপদ নগরী উপহার দেয়া সম্ভব মর্মে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এ-সময় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ কমিমনার বিএমপি প্রলয় চিসিম ,উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ জুলফিকার আলী হায়দার ,উপ-পুলিশ কমিশনার সদর-দপ্তর বিএমপি আবু রায়হান মুহাম্মদ সালেহ ,উপ-পুলিশ কমিশনার দক্ষিণ বিএমপি মোঃ মোকতার হোসেন পিপিএম সেবা,উপ-পুলিশ কমিশনার নগর বিশেষ শাখা মোঃ জাহাঙ্গির হোসেন মল্লিক ,উপ-পুলিশ কমিশনার ট্রাফিক বিএমপি মোঃ জাকির হোসেন মজুমদার পিপিএম, উপ-পুলিশ কমিশনার উত্তর বিএমপি মোঃ খাইরুল আলম, উপ-পুলিশ কমিশনার ডিবি বিএমপি মোঃ মনজুর রহমান পিপিএম বার সহ অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তাবৃন্দ।

বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন-০১৮২২৮১৫৭৪৮

Md Saiful Islam